BREAKING NEWS

Entertainment

Technology

Travelling

Wednesday, October 4, 2017

প্রধান বিচারপতিরই অধিকার হরণ, আম নাগরিক কোথায় এবং কার কাছে যাবে রিট আবেদনের জন্য?!

প্রধান বিচারপতিরই অধিকার হরণ, আম নাগরিক কোথায় এবং কার কাছে যাবে রিট আবেদনের জন্য?!


ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা মৌলিক নাগরিক অধিকার।

প্রধান বিচারপতির ব্যক্তিগত ছুটির দরখাস্ত ও অসুস্থ্যতার সংবাদের বিবরণ, যদি সত্যি হয়েও থাকে, সংবিধান অনুসারে তা গোপন থাকার কথা। ব্যক্তিগত ছুটির দরখাস্ত ও অসুস্থ্যতার সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ কি সংবিধান লঙ্ঘন নয়? 

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষাকরা সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার। যা পৃথিবীর সকল সংবিধান স্বীকৃত। 
সমাজে মর্যাদাপূর্ণভাবে বেঁচে থাকতে একজন মানুষের যেসব অধিকার দরকার, সেগুলো মানবাধিকার হিসেবে বিবেচিত হয়। একটি রাষ্ট্রের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে এসবের মধ্য থেকে কিছু অধিকারকে মৌলিক হিসেবে ঘোষণা করে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই মৌলিক অধিকার ভঙ্গ হলে রাষ্ট্র প্রতিকার দিতে বাধ্য থাকে। আর এখন দেখছি রাষ্ট্রই তা হরণ করছে!!

সংক্ষেপে বলতে গেলে, মানবাধিকার মানুষের জন্মগত। আর মৌলিক অধিকার হলো আইনিভাবে স্বীকৃত।
প্রতিটি দেশের সংবিধানেই মৌলিক অধিকারের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। বাংলাদেশ সংবিধানের তৃতীয় ভাগে মৌলিক অধিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

সংবিধানের ২৬ থেকে ৪৭ (ক) অনুচ্ছেদগুলো মৌলিক অধিকার সংশ্লিষ্ট। তৃতীয় ভাগের শুরুতে অর্থাৎ ২৬ নম্বর অনুচ্ছেদেই বলা হয়েছে, মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো আইন করা যাবে না। আর যদি করা হয় তবে তা বাতিল হয়ে যাবে। সরকার বা মন্ত্রিপরিষদ ইচ্ছা করলেই মৌলিক অধিকার পরিপন্থী আইন তৈরি করে এর ব্যত্যয় ঘটাতে পারবে না।

আইনের দৃষ্টিতে সমতা 
সংবিধানের ২৭ নম্বর অনুচ্ছেদে বিদ্যমান আইনে নাগরিকদের কীভাবে দেখা হয়, সে বিষয়ে বলা হয়েছে। এই অনুচ্ছেদে বলা আছে, আইনের দৃষ্টিতে প্রতিটি নাগরিক সমান।

অবস্থানগত কারণে বৈষম্য 
ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, বাসস্থান বা পেশাগত কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি বৈষম্য করা যাবে না। মৌলিক এ অধিকারের বিষয়ে সংবিধানের ২৮ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে।

সরকারি চাকরিতে অধিকার 
২৯ নম্বর অনুচ্ছেদে সরকারি চাকরিতে সবার সমান সুযোগ আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আইনের আশ্রয়লাভের অধিকার 
রাষ্ট্রের যেকোনো নাগরিকের আইনের আশ্রয়লাভের অধিকার আছে উল্লেখ করে সংবিধানের ৩১ ও ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সুস্পষ্ট কারণ ছাড়া কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে এমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না যাতে তাঁর জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পদের ক্ষতি হয়।

বিনা বিচারে আটক 
কোনো ব্যক্তিকে আটক করা নিয়ে নির্দেশনা আছে ৩৩ নম্বর অনুচ্ছেদে। এতে বলা হয়েছে, বিনা কারণে কাউকে আটক করা যাবে না। কোনো কারণে কাউকে আটক করা হলে, সেটির কারণ জানিয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। কোনো অবস্থায় তাকে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় হাজতে রাখা যাবে না। আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পার্শ্ববর্তী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আটক ব্যক্তিকে হাজির করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

জোরপূর্বক শ্রম 
ফৌজদারি অপরাধের সাজাপ্রাপ্ত আসামি না হলে অথবা জনগণের বৃহৎ স্বার্থে আবশ্যক না হলে কাউকে জোর করে কোনো কাজ করানো যাবে না। এ বিষয়টি বলা হয়েছে ৩৪ নম্বর অনুচ্ছেদে।

বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে রক্ষণ 
কেউ কোনো অপরাধ করলে তার বিচার অবশ্যই ওই সময়ে প্রচলিত আইনে করতে হবে বলে ৩৫ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে। এক অপরাধের জন্য একাধিকবার শাস্তি দেওয়া যাবে না।
এ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রতিটি নাগরিকের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারের অধিকার রয়েছে। কাউকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যাবে না এবং নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাবে না।

সমাবেশ, সংঘটন ও চলাফেরার স্বাধীনতা 
জনস্বার্থে আইনের মাধ্যমে আরোপিত যুক্তিসংগত বাধানিষেধ ছাড়া দেশের যেকোনো স্থানে অবাধ চলাফেরার, দেশত্যাগ ও পুনঃপ্রবেশের স্বাধীনতা রয়েছে নাগরিকদের। ৩৬, ৩৭ ও ৩৮ নম্বর অনুচ্ছেদে বিষয়গুলোর উল্লেখ করা হয়েছে। এ অনুচ্ছেদগুলোতে জনস্বাস্থ্য ও জনশৃঙ্খলার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে যেকোনো সমাবেশ বা সংগঠনের অধিকার প্রতিটি নাগরিকেরই রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

চিন্তা, বিবেক ও বাকস্বাধীনতা 
রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের মাধ্যমে যুক্তিসংগত বাধানিষেধ সাপেক্ষে প্রতিটি নাগরিকের চিন্তা, বিবেক ও বাকস্বাধীনতা রয়েছে। ৩৯ নম্বর অনুচ্ছেদে বিষয়টির উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, সংবাদক্ষেত্রগুলোতেও এ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।

পেশা নির্বাচনের স্বাধীনতা 
যেকোনো নাগরিক আইন অনুযায়ী যেকোনো কাজকে নিজের পেশা হিসেবে বাছাই করতে পারবে বলে ৪০ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে।

ধর্মীয় স্বাধীনতা 
প্রতিটি নাগরিকের নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা থাকবে বলে ৪১ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, কাউকে জবরদস্তি করে কোনো ধর্ম পালনে বা পাঠদানে বাধ্য করা যাবে না।

সম্পত্তির অধিকার 
আইনের মাধ্যমে আরোপিত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে প্রতিটি নাগরিক সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর করতে পারবে বলে ৪২ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে।

গৃহ ও যোগাযোগের অধিকার 
রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলার স্বার্থে আইনের মাধ্যমে আরোপিত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে প্রতিটি নাগরিকের নিজ গৃহে নিরাপত্তা লাভের অধিকার থাকবে। ৪৩ নম্বর অনুচ্ছেদে বিষয়টির উল্লেখ করে বলা হয়েছে, নাগরিকদের চিঠিপত্র ও যোগাযোগের গোপনীয়তা রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

মৌলিক অধিকার ভঙ্গ হলে করণীয় 
যে কোনো কারণে মৌলিক অধিকার ভঙ্গ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সংবিধানের ১০২(১) নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট আবেদনের মাধ্যমে অধিকার পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।

আমাদের প্রধান বিচারপতিরই অধিকার হরণ, আম নাগরিক কোথায় এবং কার কাছে যাবে রিট আবেদনের জন্য? ! 

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ছুটিতে যাওয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষাপটে এক মাসের ছুটি চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো তার আবেদনটি সংবাদমাধ্যমের জন্য প্রকাশ করে দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
এখন প্রশ্ন দেখাদিয়েছে সংবিধানের কোন বিধি মোতাবেক একজন আইনজ্ঞ আইন মন্ত্রী হয়ে এস কে সিনহার মৌলিক অধিকার হরণ করলেন? ইহাতে কি আইনমন্ত্রীর শপথ ভঙ্গ হয়েছে? যদি হয় তাহলে কিহবে?
এছারা সুপ্রিম কোর্ট অফ বাংলাদেশের ওয়েব সাইটে ''এন্যুয়াল রিপোর্ট অফ ২০১৬'' য়ে যে স্বাক্ষর রয়েছে তার সাথে ‘’ছুটি চাহিয়া আবেদন পত্রের’’ স্বাক্ষরের মিল নাই !! দরখাস্তে বানানের ভুল। 
সংঘত কারণে দেশের নাগরিকদের উৎকণ্ঠা বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। 

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান 
প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি
বাংলাদেশ নাগরিক শক্তি



Monday, May 15, 2017

আমি রাজনীতি করিনা। আই হেইট পলিটিকস।

ইতিহাস কে জানতে হবে। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
পলাশীর জয়ের পর ১৭৫৭ সালে যখন ক্লাইভের বাহিনী মাত্র কয়েকশ সৈন্য নিয়ে মুর্শিদাবাদে ঢুকছিল, তখন রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে মানুষজন তামাশা দেখছিল। ক্লাইভ বলেছিল জনগন যদি একটা করে পাথরের কণা নিক্ষেপ করত তাহলে আমরা মাটির সাথে মিশে যেতাম। রাজনৈতিকভাবে বিভাজিত, অসংযুক্ত, নিরাশক্ত বা অসচেতন নাগরিক হলে যা হয়। কিন্তু এই নাগরিক আরামে থাকেনি। মাত্র ১৩ বছরের মাথায়, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর দেওয়ানী লাভের কয়েক বছরের মধ্যে, খাজনার নামে সীমাহীন লুটপাটের। তাঁরাও টাকা বিদেশে পাচার করেছিল। যেকারণে দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসে। তাতে বাঙলার ৩ ভাগের ১ ভাগ লোক উধাও হয়ে যায়। বর্তমানে একই পন্থায় ট্যাক্স আর ভ্যট দিচ্ছে নাগরিক আর ওনারা এক্সপোর্ট করছেন মহা আনন্দে। আমি রাজনীতি করিনা। আই হেইট পলিটিকস। সময় যখন আসবে তখন এই মানসিকতার লোকেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
১৯৭৪ সালের ভয়াবহ দূর্ভিক্ষে ১০ লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে বাংলাদেশ জন্মের মাত্র দুই বছরের মাথায়। সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত বাংলাদেশ সরকার ও প্রশাসনের সীমাহীন দূর্নীতি ও লুটপাট, দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি, মুক্তিযুদ্ধে সাহায্যকারী ভারত সরকারের লুটপাট - এর কারণগুলো মূলত দায়ী। আশ্চর্য ব্যাপার! ১৯৭০ এর ঘুর্নিঝড়ের পরপর ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে এদেশের মানুষ না খেয়ে মরেনি। তাহলে ১৯৭০ সালের ঘুর্নিঝড়ের কারণে কেন ১৯৭৪ সালে মানুষ মরবে? আমেরিকর সাহায্যের জন্য কেন আমাদের বসে থাকতে হবে? এরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল, হেনরী কিসিন্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি উপাধি দিয়েছে, তারা পাকিস্তানিদের দোসর -- কেন বাংলাদেশ সরকার আমেরিকার সাহায্যের আশায় বসেছিল? কেন ভারত-রাশিয়া-ভুটান, যারা বাংলাদেশের প্রাথমিক স্বীকৃতিদাতারা সাহায্য নিয়ে এগিয়ে এলনা? এরাই তো তৎকালীন বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু!
১৯৭৪ সালের দূর্ভিক্ষের জন্য তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার ও ভারতীয় আগ্রাসন কতটুকু দায়ী?? 
#৫০০০ কোটি টাকার সম্পদ ভারতে পাচার। দুইশ বছরের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ যা পারেনি, ২৫ বছরে পাকিস্তানীরা যা করার সাহস পায়নি, মাত্র ৩ বছরে হিন্দুস্তানি বঙ্গবন্ধুরা (!) তাই করেছে।
লুটপাটের খতিয়ান:- #ধান-চাল-গম (৭০-৮০ লাখ টন, গড়ে ১০০ টাকা ধরে): ২১৬০ কোটি টাকা। #পাট(৫০ লাখ বেলের উপরে): ৪০০ কোটি টাকা। #ত্রাণ-সামগ্রী পাচার: ১৫০০ কোটি টাকা। #যুদ্ধাস্ত্র, ঔষধ, মাছ, গরু, বনজ সম্পদ: ১০০০ কোটি টাকা। ==========সর্বমোট: ৫০০০ কোটি টাকা (প্রায়) (সূত্র: জনতার মুখপত্র, ১ নভেম্বর ১৯৭৫)
ভারতীয় অমৃতবাজার দৈনিক (১২ মে ১৯৭৪) থেকে, ভারত সরকার ২-২.৫ শত রেলওয়ে ওয়াগন ভর্তি অস্ত্র-শস্ত্র স্থানান্তর করেছে, যার বাজার মূল্য আনুমানিক ২৭০০ কোটি টাকা। এছাড়াও, চীন থেকে জয়দেবপুর অর্ডিনেন্স ফ্যাক্টরী থেকে অস্ত্র নির্মানের কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ভারতে স্থানান্ত্রিত হয়। (অলি আহাদ: জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে '৭৫, পৃ:৫২৮-৫৩১)
পাটের মুকুট স্থানান্তর:-বাংলাদেশের পরিবর্তে রাতারাতি আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের মুকুট পরল ভারত। ফারাক্কা চুক্তির নামে বাংলাদেশকে মরুভূমি করার চক্রান্ত, টাকা বদলের নামে অর্থনীতি ধ্বংস, বর্ডার বাণিজ্যের নামে ভারতের বস্তপঁচা মালের বাজার। বাংলাদেশের শিল্প কারখানা থেকে যন্ত্রাংশ চুরি করে আগরতলায় পাঁচটি নতুন পাটকল স্থাপন! (আখতারুল আলম, দু:শাসনের ১৩৩৮ রজনী, পৃ: ১১৫-১১৬)
সৌখিন দেশপ্রেমিকদের অর্থনৈতিক শোষণ:- স্বাধীনতার পর কি হলো? এক সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা চলল অর্থনীতি ধ্বংসের। উৎপাদন কমে গেল, শ্রমিক অসন্তোষ বেড়ে গেল। কলকারখানা ধ্বংস হলো। গুপ্ত হত্যা শুরু হল। কোন এক অশুভ শক্তি যেন বাংলার মানুষকে নিয়ে রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠল। সেসব সৌখিন মানুষ ছারখার করে দিল বাংলার মানুষের স্বপ্নসাধ। চোরা কারবারের লাইন তারা আগেই করে রেখেছিল। প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সরকারী কর্মচারী, অসাধু ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। সরকারী সমর্থনপুষ্ট না হলে এমন অবৈধ ব্যবসা সম্ভব না ... শুধু তাই নয়, ভেজালে ছেয়ে গেল সারা দেশ। দীর্ঘ ৩ টি বছর আমরা এমনটি প্রত্যক্ষ করেছি। আমাদের চোখের সামনে চাল-পাট পাচার হয়ে গেছে সীমান্তের ওপারে, আর বাংলার অসহায় মানুষ ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বিশ্বের দ্বারে দ্বারে। (মেজর অব: মো: রফিকুল ইসলাম বীরোত্তম: :শাসনের ১৩৩৮ রজনী, পৃ: ১১৯-১২৬)
 শক্তিশালী চোরাচালানী সিন্ডিকেট:- সীমান্তের ১০ মাইল এলাকা ট্রেডের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হলো। এর ফলে ভারতের সাথে চোরাচালানের মুক্ত এলাকা গড়ে উঠে। পাচার হয়ে যায় দেশের সম্পদ। (আবুল মনসুর আহমদ: আমার দেখা রাজনীতির ৫০ বছর, পৃ: ৪৯৮) এর ফলে চোরাচালানীদের যে শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল, তা আজও আছে এবং তা দেশের অনুন্নত অর্থনীতির জন্য দায়ী। তাজুদ্দীন কর্তৃক মুদ্রামান হ্রাস: - এক অভাবনীয় ও অচিন্তনীয় ঘটনা। ১ জানুয়ারী ১৯৭২ সালে তাজুদ্দিন এক আদেশ বলে দেশের মুদ্রামান ৬৬% হ্রাস করেন। এর আগে বাংলাদেশের মুদ্রামান ভারতের চেয়ে বেশি ছিল। তাজুদ্ধীনের আদেশে দেশের অর্থনীতি মুদ্রাস্ফিতি বেড়ে গেল ও জনজীবনে দ্রব্যমূল্য হল আকাশচুম্বী। এছাড়া ভারত-বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পূরক আখ্যা দিয়ে ভারতে পাট বিক্রির নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল। নাম মাত্রমূল্যে বা জালটাকায় পাট পাচার শুরু হল। (অলি আহাদ: জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে '৭৫, পৃ:৫২৮-৫৩১)
ভারত জালনোট ছেপে অর্থনীতি ধ্বংসের আয়োজন করে:- বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া ধনসম্পদের পরিবর্তে আরো যে সব মহামূল্যমান (!) ধনসম্পদ আসত সেগুলোর মধ্যে ছিল ভারতে ছাপা বাংলাদেশী জাল নোট। এর পরিণাম এতই ভয়াবহ যে তাজুদ্দীন বলতে বাধ্য হয়েছেন, 'জালনোট আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস করিয়া দিয়াছে'। (আব্দুর রহিম আজাদ: ৭১ এর গণহত্যার নায়ক কে: পৃ: ৫২)
ক্ষমতাসীনদের স্বীকারোক্তি:-  বাংলাদেশের কতিপয় নেতার বিদেশে ব্যাংক ব্যালান্স রয়েছে, তারা অনবরত দেশ থেকে মুদ্রা পাচার করে দিচ্ছে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদ্ন্ড ভেঙ্গে পড়ছে। দেশের মানুষ কাপড়ের অভাবে মরছে, আর এক শ্রেণীর মানুষ লন্ডনে কাপড়ের কল চালু করছে। (তাজুদ্দীন, জনপদ ১১ মার্চ ১৯৭৪)
দেশ স্বাধীনের দুদিনেই শুরু হল হরিলুট। শিল্প কারখানায় অস্তিত্বহীন শ্রমিকের নামে মাহিনা লুট, পাটকলগুলিতে যন্ত্রাংশ ক্রয়ের নামে লুট, বস্রশিল্পে তুলা ও সুতা কেনায় কোটি কোটি টাকা লুট, ১৯৭১ এর অবাঙ্গালীদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে লুট, ১৬ ডিভিশন নামের ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার নামে সরকারী সম্পদ লুট। (এম এ মোহায়মেন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামীলীগ, পৃ ১৪, ৪৪) কলকাতায় রাজনৈতিক নেতাদের যৌন ট্রিপ, গায়ক ও নর্তকী আমদানী: 'কয়েকদিন আগে তোমাদের কিছু নেতা কলকাতা এসেছিল কিছু নমকরা গায়ক-নর্তকী ভাড়া করার জন্য। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে এরকম কাজ শুধু অনৈতিকও নয়, অমার্জনীয়। দু:খ হয়, তোমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে আমারও কিছু অবদান ছিল।' (কবি বুদ্ধদেব বসু, আমার দেশ : আমার স্বাধীনতা, পাক্ষিক পালাবদল)
লুটপাট সমিতির সদস্যরা তখন কোলকাতার অভিজাত পাড়ার হোটেল, বার, রেস্তোরায় বেহিসেবী খরচের জন্য 'জয় বাংলার শেঠ' উপাধী পেয়েছিল। সেখানে মুক্তহস্তে খরচ করতো, বিলাসবহুল ফ্লাটে থাকতো। সন্ধ্যের পরে হোটেল গ্র্যান্ড, প্রিন্সেস, ম্যাগস, ব্লু ফক্স, মলিন র্যু, হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনালে দামী পানীয় ও খাবারের সঙ্গে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি উপভোগ করতো। সারা রাত পার করে ভোর বেলা ফিরতো নিজেছের বিলাসবহুল ফ্লাটে। (শরীফুল হক ডালিম, যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি, পৃ ১২০-১২২।)
 আমাদেরকে আমাদের ইতিহাস জেনে শিক্ষা নিতে হবে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের প্রতিক্রিয়ায় সংঘটিত দিল্লিজেনোসাইডে দিল্লিতে যখন ব্রিটিশ সৈন্যরা কামানের গোলা নিক্ষেপ করছিল দিল্লির অধিবাসীরা মশকরা করে মজা লুটতেছিল। তাঁরা মনে করেছে এটা এক ধরনের আতশবাজি। তাঁদের মজা এতেই সীমাবদ্ধ ছিলনা। যখন দিল্লিতে নির্বিচারে মানুষদের মারা হচ্ছিল তখনো তাঁদের কোন হুঁশ ছিলনা। প্রভাবশালী ও অভিজাত লোকদের গ্রেফতার করা হচ্ছিল, গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছিল।অথচ ফাঁসিতে ঝুলানোর আগের দিন রাতেও তারা দাবা ও অন্যান্য খেলায় ব্যস্ত ছিল। মুসলিমদেরকে দুনির্দিষ্টভাবে টার্গেট করে মেরে ফেলা হচ্ছিল। তাঁদেরকে ফাঁসিতে ঝুলানোর দৃশ্যটা ছিল মর্মান্তিক।তাঁদেরকে লাইন ধরে দাঁড় করানো হত। এক গ্রুপ সামনে অন্য গ্রুপকে মারা হত এবং এই দৃশ্য দেখতে বাধ্য করত। হাত বেঁধে কামানের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা হত ভিক্টিমদের। যখন কামান দাগানো হত সেই মানুষের শরীরটা উড়ে গিয়ে পরত শহরের বাহিরে। আর এই দৃশ্য দেখে মজা নিতে আসত সাধারণ ব্রিটিশরা, এসব দেখে তাঁরা আনন্দ পেত।
মা-বোন ও নারীদের অবস্থা ছিল সবচেয়ে করুণ। তাঁদের অনেকেই এমন ছিলেন যে ঘরের বাহিরে যায়নি, পর্দার মধ্যে ছিল।ঘরে ঘরে যখন ব্রিটিশ সৈন্যরা যেতে লাগল তাঁরা ধর্ষণ থেকে বাঁচতে,সম্মান, ইজ্জত বাঁচাতে পানির কুপগুলোতে লাফিয়ে পরতে লাগল। মরতে মরতে পুরো কূপগুলো এতটাই ভরে গিয়েছিল যে শেষের দিকে যারা লাফিয়ে পরত, পরত অন্য দেহের ওপর। মানব শীরের লাশে কূপ ভর্তি হয়ে গভীরতা কমে আসায় শেষের দিকে আত্মহত্যা করতে যাওয়া কেউ কেউ মরতনা। পরে তাদের অনেককেই আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এর ওপর ছিল গণলুটপাট। পাঞ্জাবী শিখ, মুসলিম ও বেলুচিস্তান থেকে আগত সৈন্যদের লেলিয়ে দেয়া হয়েছিল। কিভাবে একটা সম্ভ্রান্ত জনগোষ্ঠী রাতারাতি ফকির, ভিক্ষুতে পরিনত হয়েছে। সিপাহী বিদ্রোহের পর দিল্লি'র মুসলিমেরা এমন একটি উদাহরণ। অথচ ৯০% এর বেশি নাগরিক এই বিদ্রোহের সাথেও ছিলনা,পাচেও ছিলনা। ৬ মাস পর স্যার লরেন্স যখন দিল্লির দায়িত্ব নিয়ে আসেন তিনি মুসলিমদের দিল্লিতে ফিরতে অনুমতি দেন। হাসান নিজামীর বর্ণনায় জানা যায় মাত্র কয়েক মাসে দিল্লির মুসলিম জনগোষ্ঠীরমাত্র ২৫% তাদের আবাসে ফিরে আসতে পেরেছিল।
ইতিহাসকে জানতে হবে। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমি রাজনীতি করিনা। আই হেইট পলিটিকস বলা বন্ধ করুন। সচেতন নাগরিক হিসাবে নিজেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করুন। অতিতকে জানুন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।

বাংলাদেশ নাগরিক শক্তি'র ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হউন। সুখি সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আপনার অংশগ্রহণ এর অপেক্ষায় আমরা।


Monday, April 24, 2017

অতীত – বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ

"শাহ নেয়ামাতুল্লাহ ওয়ালী (রহঃ) এর ভবিষ্যৎবাণী"
আল্লাহ্ তা‘য়ালা প্রদত্ত ইলহাম এর জ্ঞান দ্বারা আজ থেকে প্রায় সাড়ে আটশত বছর পুর্বে ( হিজরী ৫৪৮ সাল মোতাবেক ১১৫২ সালে খ্রিস্টাব্দে) শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহঃ তার বিখ্যাত কাব্যগুলো রচনা করেন। অনেক ওলী আউলিয়া মাশায়েখগণ মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ইলহাম পেয়ে থাকেন। উপমহাদেশের ইলমী জনক শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহঃ তার ইলহামী ইলম দিয়ে বিখ্যাত গ্রন্থ সাওয়াতিউল ইলহাম রচনা করেন, অনুরুপ হযরত শাহ্ নেয়ামতউল্লাহ রহঃ ছিলেন একজন ওলী আল্লাহ। উনি সেই ইলমে লাদুনীর (আল্লাহ্ তা‘য়ালা প্রদত্ত জ্ঞান) কিছু অংশ এই কবিতায় প্রকাশ করেছেন যা কবিতার শেষ পংক্তি থেকে বুঝা যাচ্ছে।
এটি লিখার পর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রতিটি ভবিষ্যদ্বানী হুবহু মিলে গিয়েছে। ব্রিটিশ বড় লাট লর্ড কার্জনের শাসনামলে (১৮৯৯-১৯০৫) এর প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কবিতার ৩৭ নং প্যারা থেকে খেয়াল করুন। কারন এর পুর্বের লাইন গুলো অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাওয়ায় শুধুমাত্র বর্তমান ও ভবিষতে কি ঘটতে পারে এটাই আমাদের দেখার বিষয়।
আমাদের দুর্ভাগ্যই বলা চলে! বাংলাদেশের মুসলমান এ সম্পর্কে কোনো খোঁজই রাখে না।
কবিতা টি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত “কাসিদায়ে সাওগাত” বইতে পাবেন। এই ছাড়াও মদিনা পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত ”মুসলিম পুনঃজাগরণ প্রসঙ্গ ইমাম মাহদি” বইতেও পাবেন। যারা উর্দু বুঝেন তারা এই নিয়ে ৮ পর্বের সিরিজ আলোচনা শুনতে পারেন, পাকিস্তানী বিশেষজ্ঞ জায়েদ হামিদ খুব সুন্দর করে ব্যাখ্যা সহ কারে উনার সকল ভবিষ্যৎ বাণী (ইলহাম) তুলে ধরেছেন।
বাংলা ভাষায় রুহুল আমীন খান অনূদিত শাহ নিয়ামতুল্লাহ রহঃ এর একটি কবিতা ১৯৭০/৭১ এর দিকে এদেশে প্রকাশিত হয়েছিল। কবিতাটিতে ৫৪টি প্যারা রয়েছে। নতুন টিকা সংযোজন ও পরিমার্জিত করে পুনঃসম্পাদন করে নিম্নে তা দেয়া হলঃ-
(১) পশ্চাতে রেখে এই ভারতের অতীত কাহিনী যত
আগামী দিনের সংবাদ কিছু বলে যাই অবিরত
টীকাঃ ভারত= ভারতীয় উপমহাদেশ
(২) দ্বিতীয় দাওরে হুকুমত হবে তুর্কী মুঘলদের
কিন্তু শাসন হইবে তাদের অবিচার যুলুমের
টীকাঃ দ্বিতীয় দাওর= ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসনের দ্বিতীয় অধ্যায়। শাহবুদ্দীন মুহম্মদ ঘোরি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আমল (১১৭৫ সাল) থেকে সুলতান ইব্রাহীম লোদীর শাসনকাল (১৫২৬ সাল) পর্যন্ত প্রথম দাওর। এবং সম্রাট বাবর শাসনকাল (১৫২৬ সাল) থেকে ভারতে মুসলিম দ্বিতীয় দাওর।
(৩) ভোগে ও বিলাসে আমোদে-প্রমোদে মত্ত থাকিবে তারা
হারিয়ে ফেলিবে স্বকীয় মহিমা তুর্কী স্বভাব ধারা
টীকা: মুঘল শাসকদের অনেকই আল্লাহ ওয়ালা ছিলেন। তবে কেউ কেউ প্রকৃত ইসলামী আইনকানুন ও শরীয়তি আমল থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। আর হাদীস শরীফেই আছে: যখন মুসলমানরা ইসলাম থেকে দূরে সরে যাবে, তখন তার উপর গজব স্বরূপ বহিশত্রুকে চাপিয়ে দেয়া হবে।
(৪) তাদের হারায়ে ভিন দেশী হবে শাসন দণ্ডধারী
জাকিয়া বসিবে, নিজ নামে তারা মুদ্রা করিবে জারি
টীকাঃ ভিন দেশী= ইংরেজদের বোঝানো হয়েছে
(৫) এরপর হবে রাশিয়া-জাপানে ঘোরতর এক রণ
রুশকে হারিয়ে এ রণে বিজয়ী হইবে জাপানীগণ
(৬) শেষে দেশ-সীমা নিবে ঠিক করে মিলিয়া উভয় দল
চুক্তিও হবে, কিন্তু তাদের অন্তরে রবে ছল
টীকা: বিশ শতকের প্রারম্ভে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জাপান কোরিয়ার উপর আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে পীত সাগর, পোট অব আর্থার ও ভলডিভস্টকে অবস্থানরাত রুশ নৌবহরগুলো আটক করার মধ্য দিয়ে এ যুদ্ধ শুরু হয়। অবশেষে রাশিয়া জাপানের সাথে চুক্তি করতে বাধ্য হয়।
(৭) ভারতে তখন দেখা দিবে প্লেগ আকালিক দুর্যোগ
মারা যাবে তাতে বহু মুসলিম হবে মহাদুর্ভোগ
টীকা: ১৮৯৮-১৯০৮ সাল পর্যন্ত ভারতে মহামারী আকারে প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এতে প্রায় ৫ লক্ষ লোকের জীবনাবসান হয়। ১৭৭০ সালে ভারতে মহাদুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়। বংগ প্রদেশে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ থেকে উদ্ভুত মহামারিতে এ প্রদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ প্রাণ হারায়।
(৮) এরপর পরই ভয়াবহ এক ভূকম্পনের ফলে
জাপানের এক তৃতীয় অংশ যাবে হায় রসাতলে
টীকা: ১৯৪৪ সালে জাপানের টোকিও এবং ইয়াকুহামায় প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প সংঘটিত হয়।
(৯) পশ্চিমে চার সালব্যাপী ঘোরতর মহারণ
প্রতারণা বলে হারাবে এ রণে জীমকে আলিফগণ
টীকা: ১৯১৪-১৯১৮ সাল পর্যন্ত চার বছরাধিকাল ধরে ইউরোপে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়।
জীম= জার্মানি, আলিফ=ইংল্যান্ড।
(১০) এ সমর হবে বহু দেশ জুড়ে অতীব ভয়ঙ্কর
নিহত হইবে এতে এক কোটি ত্রিশ লাখ নারী-নর
টীকা: ব্রিটিশ সরকারের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ি প্রথম মহাযুদ্ধে প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ লোক মারা যায়।
(১১) অতঃপর হবে রণ বন্ধের চুক্তি উভয় দেশে
কিন্তু তা হবে ক্ষণভঙ্গুর টিকিবে না অবশেষে
টীকা: ১৯১৯ সালে প্যারিসের ভার্সাই প্রাসাদে প্রথম মহাযুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে ‘ভার্সাই সন্ধি’ হয়, কিন্তু তা টিকেনি।
(১২) নিরবে চলিবে মহাসমরের প্রস্তুতি বেশুমার
‘জীম’ ও আলিফে খ- লড়াই ঘটিবে বারংবার
(১৩) চীন ও জাপানে দু’দেশ যখন লিপ্ত থাকিবে রণে
নাসারা তখন রণ প্রস্তুতি চালাবে সঙ্গোপনে
টীকা: নাসারা মানে খ্রিষ্টান
(১৪) প্রথম মহাসমরের শেষে একুশ বছর পর
শুরু হবে ফের আরো ভয়াবহ দ্বিতীয় সমর
টীকা: ১ম মহাযুদ্ধ সমাপ্তি হয় ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর, এবং দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে সূচনা হয় ১৯৩৯ সালে ৩রা সেপ্টেম্বর। দুই যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময় প্রায় ২১ বছর।
(১৫) হিন্দ বাসী এই সমরে যদিও সহায়তা দিয়ে যাবে
তার থেকে তারা প্রার্থিত কোন সুফল নাহিকো পাবে
টীকা: ভারতীয়রা ব্রিটিশ সরকারের প্রদত্ত যে সকল আশ্বাসের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে তাদের সহায়তা করেছিল, যুদ্ধের পর তা বাস্তবায়ন করেনি।
(১৬) বিজ্ঞানীগণ এ লড়াইকালে অতিশয় আধুনিক
করিবে তৈয়ার অতি ভয়াবহ হাতিয়ার আনবিক
টীকা: মূল কবিতায় ব্যবহৃত শব্দটি হচ্ছে ‘আলোতে বকর’ যার শাব্দিক অর্থ বিদ্যুৎ অস্ত্র, অনুবাদক বিদ্যুৎ অস্ত্রের পরিবর্তে ‘আনবিক অস্ত্র তরজমা করেছেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে আমেরিকা হিরোসিমা-নাগাসাকিতে আনবিক বোমা নিক্ষেপ করে। এতে লাখ লাখ বেসামরিক লোক নিহত হয়। কবিতায় বিদ্যুৎ অস্ত্র বলতে মূলত আনবিক অস্ত্রই বুঝানো হয়েছে।
(১৭) গায়েবী ধনির যন্ত্র বানাবে নিকটে আসিবে দূর
প্রাচ্যে বসেও শুনিতে পাইবে প্রতীচীর গান-সুর
টীকা: গায়েবী ধনীর যন্ত্র রেডিও-টিভি
(১৮) মিলিত হইয়া ‘প্রথম আলিফ’ ‘দ্বিতীয় আলিফ’ দ্বয়
গড়িয়া তুলিবে রুশ-চীন সাথে আতাত সুনিশ্চয়
(১৯) ঝাপিয়ে পড়িবে ‘তৃতীয় আলিফ’ এবং দু’জীম ঘারে
ছুড়িয়া মারিবে গজবী পাহাড় আনবিক হাতিয়ারে।
অতি ভয়াবহ নিষ্ঠুরতম ধ্বংসযজ্ঞ শেষে
প্রতারণা বলে প্রথম পক্ষ দাড়াবে বিজয়ী বেশে
টীকা: প্রথম আলিফ= ইংল্যান্ড দ্বিতীয় আলিফ=আমেরিকা তৃতীয় আলিফ= ইটালি দুই জীম=জার্মানি ও জাপান
(২০) জগৎ জুড়িয়া ছয় সালব্যাপী এই রণে ভয়াবহ
হালাক হইবে অগিণত লোক ধন ও সম্পদসহ
টীকা: জাতিসংঘের হিসেব মতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৬ কোটি লোক মারা গিয়েছিল।
(২১) মহাধ্বংসের এ মহাসমর অবসানে অবশেষে
নাসারা শাসক ভারত ছাড়িয়া চলে যাবে নিজ দেশে
কিন্তু তাহারা চিরকাল তরে এদেশবাসীর মনে
মহাক্ষতিকর বিষাক্ত বীজ বুনে যাবে সেই সনে
টীকা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয় ১৯৪৫ সালে, আর ভারত উপমহাদেশ থেকে নাসারা তথা ইংরেজ খ্রিস্টানরা চলে যায় ১৯৪৭ এ। এই প্যারার দ্বিতীয় অংশের ব্যাখ্যা দুই রকম আছে।
ক) এই অঞ্চলের বিভেদ তৈরী জন্য ইংরেজ খ্রিস্টানরা কাশ্মীরকে হিন্দুদের দিয়ে প্যাচ বাধিয়ে যায়।
খ) ইংরেজরা চলে গেলেও তাদের সংস্কৃতি এমনভাবে রেখে গেছে যে এই উপমহাদেশে লোকজন এখনও সব যায়গায় ব্রিটিশ নিয়ম-কানুন-ভাষা-সংস্কৃতি অনুসরণ করে।
** অনেকে এই ক্ষতিকর বিজ বলতে লা-মাযহাবী তথা আহলে হাদীস এবং কাদিয়ানী গোষ্ঠী মন্তব্য করেছেন।
(২২) ভারত ভাঙ্গিয়া হইবে দু’ভাগ শঠতায় নেতাদের
মহাদুর্ভোগ দুর্দশা হবে দু’দেশেরি মানুষের
টীকা: দেশভাগের সময় মুসলমানরা আরো অনেক বেশি এলাকা পেত। কিন্তু সেই সময় অনেক মুসলমান নেতার গাদ্দারির কারণে অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা হিন্দুদের অধীনে চলে যায়। ফলে কষ্টে পরে সাধারণ মুসলমানরা। এখনও ভারতের মুসলমানরা সেই গাদ্দারির ফল ভোগ করছে।
(২৩) মুকুটবিহীন নাদান বাদশা পাইবে শাসনভার
কানুন ও তার ফর্মান হবে আজেবাজে একছার
টীকা: এই প্যারা থেকে ভারত বিভাগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ধরা যায়। এই সময় এই অঞ্চলে মুসলমানদের ঝান্ডাবাহী কোন সরকার আসেনি।
**মুকুটবিহীন নাদান বাদশাহ বলতে অনেকে ‘গণতন্ত্র’কে বুঝিয়েছে। আব্রাহাম লিংকনের তৈরী গণতন্ত্রকে জনগণের তন্ত্র বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা হচ্ছে জন-নিপীড়নের তন্ত্র। এই গণতন্ত্রের নিয়ম কানুন যে আজেবাজে সে সম্পর্কে শেষ লাইনে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
(২৪) দুর্নীতি ঘুষ কাজে অবহেলা নীতিহীনতার ফলে
শাহী ফর্মান হবে পয়মাল দেশ যাবে রসাতলে
টীকা: সমসাময়িক দুর্নীতি বুঝানো হয়েছে।
(২৫) হায় আফসোস করিবেন যত আলেম ও জ্ঞানীগণ
মূর্খ বেকুফ নাদান লোকেরা করিবে আস্ফালন।
(২৬) পেয়ারা নবীর উম্মতগণ ভুলিবে আপন শান
ঘোরতর পাপ পঙ্কিলতায় ডুবিবে মুসলমান
(২৭) কালের চক্রে স্নেহ-তমীজের ঘটিবে যে অবসান
লুণ্ঠিত হবে মানী লোকদের ইজ্জত সম্মান
(২৮) উঠিয়া যাইবে বাছ ও বিচার হালাল ও হারামের
লজ্জা রবে না, লুণ্ঠিত হবে ইজ্জত নারীদের
(২৯) পশুর অধম হইবে তাহারা ভাই-বোনে, মা-বেটায়
জেনা ব্যাভিচারে হইবে লিপ্ত পিতা আর কন্যায়
(৩০) নগ্নতা আল অশ্লীলতায় ভরে যাবে সব গেহ
নারীরা উপরে সেজে রবে সতী ভেতরে বেচিবে দেহ
(৩১) উপরে সাধুর লেবাস ভেতরে পাপের বেসাতি পুরা
নারী দেহ নিয়ে চালাবে ব্যবসা ইবলিস বন্ধুরা
(৩২) নামায ও রোজা, হজ্জ্ব যাকাতের কমে যাবে আগ্রহ
ধর্মের কাজ মনে হবে বোঝা দারুন দুর্বিষহ
(৩৩) কলিজার খুন পান করে বলি শোন হে বৎসগণ
খোদার ওয়াস্তে ভুলে যাও সব নাসারার আচরণ
(৩৪) পশ্চিমা ঐ অশ্লীলতা ও নগ্নতা বেহায়ামি
ডোবাবে তোদের, খোদার কঠোর গজব আসিবে নামি
(৩৫) ধ্বংস নিহত হবে মুসলিম বিধর্মীদের হাতে
হবে নাজেহাল, ছেড়ে যাবে দেশ ভাসিবে রক্তপাতে
(৩৬) মুসলমানের জান-মাল হবে খেলনা- মুল্যহত
রক্ত তাদের প্রবাহিত হবে সাগর স্রােতের মত
(৩৭) এরপর যাবে ভেগে নারকীরা পাঞ্জাব কেন্দ্রের
ধন সম্পদ আসিবে তাদের দখলে মুমিনদের
টীকা ১: এখানে পাঞ্জাব কেন্দ্রের বলতে কাশ্মীর মনে করা হয়।
টীকা ২: প্রথম মত: ১৯৪৮ সালে মুসলিম সুলতান নিজামের অধীনস্ত হায়দারাবাদ শহরটি দখল করে নেয় হিন্দুরা। সে সময় প্রায় ২ লক্ষ মুসলমানকে শহীদ করে মুশরিক হিন্দুরা, ১ লক্ষ মা বোনের ইজ্জত লুণ্ঠন করে, হাজার হাজার মসজিদ বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। শুধু নিজামের প্রাসাদ থেকে নিয়ে যায় ৪ ট্রাক সোনা গয়না।
দ্বিতীয় মত: হিন্দুস্তানের যুদ্ধের পুর্বে মুসলিমরা সর্বপ্রথম ভারতের কাছ থেকে একটি এলাকা দখল করে নেবে। এটা হচ্ছে পাকিস্তান সিমান্তলগ্ন পাঞ্জাব ও জম্মু-কাশ্মির এলাকাটা। কারণ কাশ্মিরের স্থানীয় মুজাহিদ, আইএস, আল-ক্বায়েদা, তালেবান সহ আরো অনেক জিহাদি গ্রুপ ব্যপক আকারে প্রস্তুতুতি নেওয়া শুরু করেছে জম্মু কাশ্মির কে ভারতের দখল থেকে মুক্ত করার জন্য।
(৩৮) অনুরূপ হবে পতন একটি শহর মুমিনদের
তাহাদের ধনসম্পদ যাবে দখলে হিন্দুদের
(৩৯) হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ সেখানে চালাইবে তারা ভারি
ঘরে ঘরে হবে ঘোর কারবালা ক্রন্দন আহাজারি
টিকা: ৩৮ ও ৩৯ নং প্যারায় বলা হয়েছে, মুসলিমরা যখন কাশ্মির দখল নেবে এর পরই হিন্দুরা মুসলিমদের একটি এলাকা দখলে নেবে। এবং সেখানে ব্যাপক হত্যা ধংসযগ্য চালাবে। মুসলমানদের ধন-সম্পদ ভারত সরকার লুটপাটের মাদ্ধমে নিয়ে নেবে, মুসলিমদের ঘরে ঘরে কারবালার ন্যায় রুপধারন করবে কিন্তু আপনি কি জানেন? মুসলিমদের যে দেশটা ভারত সরকার দখলে নিয়ে এ ধরনের হত্যা ধংসযগ্য চালাবে সেটা কোন দেশ? হা সেটা আপনার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। অর্থাৎ মুসলমানরা কাশ্মীর জয় করার পর হিন্দুরা বাংলাদেশ দখল করবে।
(৪০) মুসলিম নেতা-অথচ বন্ধু কাফেরের তলে তলে
মদদ করিবে অরি কে সে এক পাপ চুক্তির ছলে
টীকা: বর্তমান সময়ে এই উপমহাদেশে এ ধরনের নেতার অভাব নেই। যারা উপর দিয়ে মুসলমানদের নেতা সেজে থাকে, কিন্তু ভেতর দিয়ে কাফিরদের এক নম্বর দালাল। সমগ্র ভারতে উপমহাদেশ তথা বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানে এর যথেষ্ট উদাহরণ আছে-যে নেতারা নামধারী মুসলমান হবে, কিন্তু গোপনে গোপনে হিন্দুবান্ধব হবে। মুসলিমদের ধংস করার জন্য ভারত সরকাররের সাথে গোপনে পাপ চুক্তি করবে।
(৪১) প্রথম অক্ষরে থাকিবে শীনে’র অবস্থান
শেষের অক্ষরে থাকিবে নূন’ ও বিরাজমান
ঘটিবে তখন এসব ঘটনা মাঝখানে দু’ঈদের
ধিক্কার দিবে বিশ্বের লোক জালিম হিন্দুদের
টীকা: ইসলাম ধ্বংসকারি এই শাসককে চিনার উপায় হল তার নামের প্রথম অক্ষর হবে (শ) এবং শেষের অক্ষর হবে (ন)। আর এসব ঘটনা ঘটবে দুই ইদের মাঝে। যেটা হতে পারে আগামি ইদ থেকে দুই তিন বছরের মধ্যে। একটু কল্পনা করুন এদেশে যখন ভারতীয় সেনাবাহিনী ঢুকে আপনার পিতা, আপনার ভাই ও আত্নীয় সজনদের নির্মমভাবে হত্যা ও আপনার মা বোনদের ধর্ষন করবে তখন কি অবস্থা হবে একটু ভেবেছেন? আপনি ভেবেছেন কি আপনার সাজানো সংসার আপনার চাকুরী আপনার ব্যবসার ভবিষত কি? সময় খুব অল্প যুদ্ধের প্রস্তুতি নিন। এছাড়া যে আর কোন পথ নেই। এটাই রাসুলুল্লাহ (সল্লাল্ল-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ভবিষৎবানী।
(৪২) মহরম মাসে হাতিয়ার হাতে পাইবে মুমিনগণ
ঝঞ্বারবেগে করিবে তাহারা পাল্টা আক্রমণ
(৪৩) সৃষ্টি হইবে ভারত ব্যাপিয়া প্রচণ্ড আলোড়ন
‘উসমান’ এসে নিবে জেহাদের বজ্র কঠিন পণ
(৪৪) ‘সাহেবে কিরান-‘হাবীবুল্লাহ’ হাতে নিয়ে শমসের
খোদায়ী মদদে ঝাপিয়ে পড়িবে ময়দানে যুদ্ধে
টীকা: এখানে মুসলমানদের সেনাপতির কথা বলা হয়েছে। শনি ও বৃহস্পতিগ্রহ অথবা শুক্র ও বৃহস্পতি গ্রহের একই রৈখিক কোণে অবস্থানকালীন সময়ে যে যাতকের জন্ম অথবা এ সময়ে মাতৃগর্ভে যে যাতকের ভ্রুনের সঞ্চার ঘটে তাকে বলা হয় সাহেবে কিরান বা সৌভাগ্যবান। সেই মহান সেনাপতির নাম বা উপাধি হবে ‘হাবীবুল্লাহ’।
(৪৫) কাপিবে মেদিনী সীমান্ত বীর গাজীদের পদভারে
ভারতের পানে আগাইবে তারা মহারণ হুঙ্কারে
টীকা: আক্রমণকারীরা ভারত উপমহাদেশের হিন্দু দখলকৃত এলাকার বাইরে থাকবে এবং হিন্দু দখলকৃত এলাকা দখল করতে হুঙ্কার দিয়ে এগিয়ে যাবে।
(৪৬) পঙ্গপালের মত ধেয়ে এসে এসব ‘গাজীয়ে দ্বীন’
যুদ্ধে জিতিয়া বিজয় ঝাণ্ডা করিবেন উড্ডিন
(৪৭) মিলে এক সাথে দক্ষিণী ফৌজ ইরানী ও আফগান
বিজয় করিয়া কবজায় পুরা আনিবে হিন্দুস্তান
টীকা: হিন্দুস্তান সম্পূর্ণরূপে মুসলমানদের দখলে আসবে।
(৪৮) বরবাদ করে দেয়া হবে দ্বীন ঈমানের দুশমন
অঝোর ধারায় হবে আল্লা’র রহমাত বরিষান
(৪৯) দ্বীনের বৈরী আছিল শুরুতে ছয় হরফেতে নাম
প্রথম হরফ গাফ সে কবুল করিবে দ্বীন ইসলাম
টীকা: ছয় অক্ষর বিশিষ্ট একটি নাম যার প্রথম অক্ষরটি হবে ‘গাফ’ এমন এক প্রভাবশালী হিন্দু ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম পক্ষে যোগদান করবেন। তিনি কে তা এখন বুঝা যাচ্ছে না।
(৫০) আল্লা’র খাস রহমাতে হবে মুমিনেরা খোশদিল
হিন্দু রসুম-রেওয়াজ এ ভূমে থাকিবে না এক তিল
টীকা: ভারত বর্ষে হিন্দু ধর্ম তো দূরে হিন্দুদের কোন রসম রেওয়াজও থাকবে না। (সুবহানাল্লাহ)
(৫১) ভারতের মত পশ্চিমাদেরও ঘটিবে বিপর্যয়
তৃতীয় বিশ্ব সমর সেখানে ঘটাইবে মহালয়
টীকা: বর্তমান সময়ে স্পষ্ট সেই তৃতীয় সমরের প্রস্তুতি চলছে। অর্থ্যাৎ সমগ্র বিশ্ব জুড়ে মুসলমাদের বিরুদ্ধে কাফিররা যুদ্ধ করছে তথা জুলুম নির্যাতন করছে। এই জুলুম নির্যাতনই তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধে রুপ নিয়ে একসময় তাদের ধ্বংসের কারণ হবে। এখানে বলা হচ্ছে মহালয় বা কেয়ামত শুরু হবে যাতে পশ্চিমারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।
(৫২) এ রণে হবে ‘আলিফ’ এরূপ পয়মাল মিসমার
মুছে যাবে দেশ, ইতিহাসে শুধু নামটি থাকিবে তার
টীকা: এ যুদ্ধের কারণে আলিফ = আমেরিকা এরূপ ধ্বংস হবে যে ইতিহাসে শুধু তার নাম থাকবে, কিন্তু বাস্তবে তার কোন অস্তিত্ব থাকবে না। বর্তমানে মুছে যাওয়ার আগাম বার্তা স্বরূপ দেশটিতে আমরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অর্থনৈতিক মন্দা চরমভাবে দেখতে পাচ্ছি।
(৫৩) যত অপরাধ তিল তিল করে জমেছে খাতায় তার
শাস্তি উহার ভুগতেই হবে নাই নাই নিস্তার
কুদরতী হাতে কঠিন দণ্ড দেয়া হবে তাহাদের
ধরা বুকে শির তুলিয়া নাসারা দাড়াবে না কভু ফের
টীকা: এখানে স্পষ্ট যিনি এই শাস্তি দিবেন তা হবে কুদরতি হাতে। যদিও বা আল্লাহ তায়ালার ক্ষেত্রে কুদরত, নবী রাসূলের ক্ষেত্রে মুজিজা, এবং ওলী আল্লাহ গণের ক্ষেত্রে কারামত শব্দ ব্যাবহৃত হয়। এখানে কাফিরদের শাস্তি কোন ওলী আল্লাহ কারামতের মাধ্যমেই দিবেন এটাই বুঝান হয়েছে। এই শাস্তির কারণে নাসারা বা খ্রিস্টানরা আর কখনই মাথা তুলে দাড়াতে পারবে না।
(৫৪) যেই বেঈমান দুনিয়া ধ্বংস করিল আপন কামে
নিপাতিত শেষকালে সে নিজেই জাহান্নামে
(৫৫) রহস্যভেদী যে রতন হার গাথিলাম আমি তা – – যে
গায়েবী মদদ লভিতে, আসিবে উস্তাদসম কাজে।
(৫৬) অতিসত্বর যদি আল্লা’র মদদ পাইতে চাও
তাহার হুকুম তালিমের কাজে নিজেকে বিলিয়ে দাও
টীকাঃ বর্তমানে সমস্ত ফিতনা হতে হিফাজত হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে সমস্ত হারাম কাজ থেকে খাস তওবা করা। সেটা হারাম আমল হোক কিংবা কাফের মুশরিক প্রনিত বিভিন্ন নিয়ম কানুন হোক।
(৫৭) ‘কানা জাহুকার’ প্রকাশ ঘটার সালেই প্রতিশ্রুত
ইমাম মাহাদি দুনিয়ার বুকে হবেন আবির্ভূত
টীকাঃ ‘কানা জাহুকার’ সূরা বনী ইসরাইলের ৮১ নং আয়াতের শেষ অংশ। যার অর্থ মিথ্যার বিনাশ অনিবার্য। পূর্ব আয়াতটির অর্থ ‘সত্য সমাগত মিথ্যা বিলুপ্ত’। অর্থাৎ যখন মিথ্যার বিনাশ কাল উপস্থিত হবে তখন উপযুক্ত সময়েই আবির্ভূত হবেন ‘মাহদী’ বা ‘পথ প্রদর্শক’। উনার আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে বাতিল ধ্বংস হবে।
(৫৮) চুপ হয়ে যাও ওহে নেয়ামত এগিও না মোটে আর
ফাঁস করিও না খোদার গায়বী রহস্য — আসরার
এ কাসিদা বলা করিলাম শেষ ‘কুনুত কানয’ সালে
(অদ্ভুত এই রহস্য গাঁথা ফলিতেছে কালে কালে)
টীকাঃ ‘কুনুত কানয সাল’ অর্থাৎ হিজরি সন ৫৪৮ মোতাবেক ১১৫৮ ইংরেজি সাল হচ্ছে এ কাসিদার রচনা কাল। এটা আরবি হরফের নাম অনুযায়ী সাংকেতিক হিসাব।
 
Copyright © 2014 Mohammad Mizanur Rahman. Designed by OddThemes | Distributed By Gooyaabi Templates