জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে ১৮ বছরের কম বয়সী প্রত্যেককে শিশু বলা হয়েছে।বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রত্যেককে শিশু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।তাই ১৪ বছরের মধ্যে সকলেই এ দেশের শিশু।
জাতিসংঘের শিশু সনদ এখন একটি আন্তর্জাতিক আইন। এতে বলা হযেছে, শিশুর বেঁচে থাকা তাদের জন্মগত অধিকার। এরই সাথে শিশুর জন্য নিচের অধিকার গুলির কথাও মনে রাখতে হবে আমাদের। ক) স্নেহ, ভালবাসা ও সমবেদনা পাওয়ার অধিকার, খ) পুষ্টিকর খাদ্য ও চিকিৎসা সুবিধা পাওয়ার অধিকার, গ) অবৈতনিক শিক্ষার সুযোগ, ঘ) খেলাধুলা ও আমোদ-প্রমোদের পূর্ণ সুযোগ পাওয়ার অধিকার, ঙ) একটি নাম ও নাগরিকত্ব, চ) পঙ্গু শিশুদের বিশেষ যত্ন ও সেবা শুশ্র“ষা পাওয়া অধিকার, ছ) দুর্যোগের সময় সবার আগে ত্রাণ ব্যবস্থা পাওয়ার অধিকার, জ) সমাজের কাজে লাগার উপযোগী হয়ে গড়ে ওঠার এবং ব্যক্তি সামর্থ অর্থাৎ সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাওয়ার অধিকার, ঝ) শান্তি ও বিশ্ব ভ্রাতৃত্বে মনোভাব নিয়ে গড়ে ওঠার সুযোগ পাওয়ার অধিকার, ঞ) এ সব অধিকার জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে বিশ্বের সব শিশুর ভোগের অধিকার থাকবে।
বাংলাদেশে শিশুদের অধিকার রক্ষা ও তাদের বিকাশের জন্য রয়েছে নানা আইন। কিন্তু তার পরেও বাংলাদেশে লঙ্ঘিত হচ্ছে শিশু অধিকার। সমাজ থেকে শিশু-কিশোরদের যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার কথা তা পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিশুনীতিকে পাশ কাটিয়েই শিশুদের ভারী গৃহশ্রমসহ বেআইনি কাজে যুক্ত করা হচ্ছে।
দেশে ১৪ বছরের কম বয়সীদের গৃহশ্রমে নিযুক্ত না করায় হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরও তা কার্যকর হচ্ছে না। বাংলাদেশে গৃহকর্মে নিয়োজিতদের সিংহভাগই কিশোর-কিশোরী ও শিশু। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ-২০১০ সালের তথ্যানুযায়ী গৃহকর্মে নিয়োজিত মোট শিশু (৫-১৭ বছর বয়সী) শ্রমিক এক লাখ ২৫ হাজার। জাতীয় শিশুনীতি-২০১০ এর খসড়ায় বলা হয়েছে, ১৪ বছরের কম বয়সীদের সার্বক্ষণিক শিশুশ্রমে নিয়োগ করা যাবে না, কিন্তু বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে প্রায় ৩০০ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনৈতিক কাজে শিশুরা শ্রম দিচ্ছে।দেশের প্রচলিত আইনে শিল্প কারখানায় শিশু শ্রম নিষিদ্ধ হলেও জীবিকার প্রয়োজনে শৈশব অবস্থায় অনেক শিশুকে নানা ধরনের শ্রমে নিয়োজিত হতে হচ্ছে ৷ শহর, গ্রাম উভয় অঞ্চলেই শিশু শ্রমিক নিয়োগ করা হয় ৷
সরকারের পরিসংখ্যান বিভাগের হিসেব মতে দেশের মোট শ্রমিকের ১২% শিশু শ্রমিক; এ হিসেবে কেবল মাত্র নিবন্ধনকৃত শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিশু শ্রমিকদের ধরা হয়েছে ৷ অনিবন্ধনকৃত বা ননফরমাল সেক্টরে কর্মরত শিশু শ্রমিকদের হিসেব করলে এ সংখ্যা আরো বাড়বে ৷ শুধু শহরাঞ্চলেই চরম দারিদ্র্য ও বঞ্চনার মাঝে ১৫ বছরের কম বয়সী যে সকল শিশু শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে তাদের সংখ্যা ১ঌঌ০ সালে প্রায় ২ঌ লক্ষ বলে এক সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে ৷
আরও অতি বাস্তবতা হল নুন আনতে যাদের পান্তা ফুরায় তাদের ঘরে সন্তান এলে সে শিশুটি হয় অবহেলিত, নিগৃহীত ও অধিকার বঞ্চিত। পরিবারের মধ্যেই সে শিশু পরগাছার মত বেড়ে ওঠে। দারিদ্রের কারণেই শিশুরা একটি কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড়ায়। অতি অল্প বয়সে ভারী শ্রমের পথ বেছে নিয়ে মেনে নেয় সম্ভাব্য পঙ্গুত্বকে। নানা প্রতিবন্ধকতার সাথে যুদ্ধ করে বেড়ে ওঠে অধিকার বঞ্চিত শিশুরা। শিশুরা অনেক ক্ষেত্রে বয়স্ক শ্রমিকের কাজ করে প্রাপ্য মজুরী থেকে বঞ্চিত হয়। অদক্ষ শ্রমের দোহাই দিয়ে শিশুটিকে অধিক খাটিয়েও ন্যায্য পারিশ্রমিক দেয়া হয় না। শিশু শ্রমিকরা আইনের পথ চেনে না। ওরা নীরবে বেঁচে থাকার তাগিদে মুখ বুজে কাজ করে। পেটের জ্বালায় শিশুরা মালিক আর মনিবের দুর্ব্যবহার, অবহেলা সহ্য করেও স্বল্প আয়ে কাজ করে। আবার কোন শিশু জড়িয়ে পড়ে নানা রকম সমাজ বিরোধী কাজের সাথে। অথচ শিশুরা দেশের ভবিষ্যৎ জনশক্তি, আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক এবং দেশের কর্ণধার। শিশুই আমাদের আশা ভরসা। শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সর্ব প্রথম দেশ থেকে দারিদ্র দূর করতে হবে। দূর করতে হবে নানা কুসংস্কার।যে শিশু আগামীর নাগরিক, সে শিশুর জীবন যদি অরক্ষিত হয়ে যায় তবে আমাদের গোটা সমাজই বিপণ্ণ হয়ে পড়বে। অতীত যেমন আমাদের মাঝে বেঁচে আছে। আমরাও বেঁচে থাকবো ভবিষ্যতের মাঝে। হয়তো ঠিক আমরা নই-আমাদের কীর্তি আর আমাদের স্বপ্ন। শিশুদের হাতেই জাতির উন্নয়ন সম্ভাবনার চাবিকাঠি তাই শিশুদেরকে গড়ে তুলতে হবে আমাদেরই। শিশুরা জাতির সেরা সম্পদ। আজ যারা শিশু, আগামীকাল হবে তারাই দেশ গড়ার সৈনিক। শিশুকে তার প্রাপ্য পূর্ণ অধিকার দিয়ে গড়ে তুলতে পারলেই সার্থক হবে বাংলাদেশ।https://www.facebook.com/MohammadMizanurRahmanBNS
আমি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি https://www.facebook.com/BangladeshNagarikShakti ''বাংলাদেশ নাগরিক শক্তি'' হিসাবে ঘোষণা করছি যে ''বাংলাদেশ নাগরিক শক্তি'' আপনার সমর্থন দিন সহযোগিতা করুন। ''বাংলাদেশ নাগরিক শক্তি'' দেশের নাগরিক সেবার সুযোগ পেলে সংসদে আইন পাশ করে শিশু অধিকার নিরশ্চিত করবে ইন শাহ্ আল্লাহ্।
আমি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি https://www.facebook.com/BangladeshNagarikShakti ''বাংলাদেশ নাগরিক শক্তি'' হিসাবে ঘোষণা করছি যে ''বাংলাদেশ নাগরিক শক্তি'' আপনার সমর্থন দিন সহযোগিতা করুন। ''বাংলাদেশ নাগরিক শক্তি'' দেশের নাগরিক সেবার সুযোগ পেলে সংসদে আইন পাশ করে শিশু অধিকার নিরশ্চিত করবে ইন শাহ্ আল্লাহ্।
Post a Comment